দেওয়ানগঞ্জে ইউ পি সদস্যের ১লক্ষ টাকায় ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা।

Date: 2024-04-27
news-banner

বার্তা বিচিত্রা সর্বশেষ সংবাদ পেতে Google news অনুসরণের জন্য ক্লিক করুন



মো.আজাদ হোসেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি 

দেওয়ানগঞ্জের বাঘার চর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা এক নারীকে ধর্ষণের পর ১ লক্ষ টাকা জরিমানায় ধামাচাপা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সালামের বিরুদ্ধে। ডাংধরা  ইউনিয়নে গত ২৪ এপ্রিল রাতে ওই ঘটনা ঘটে। 

এলাকাবাসী জানায়, গত বছর দেওয়ানগঞ্জ  উপজেলার বাঘার চর আশ্রয়ণ কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে বসতি গড়েন ভূমিহীন দরিদ্র এক দিন মজুর। তবে তাদের সংসারে হঠাৎ এক ঝড়ে যেন নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার।

ধর্ষিতার অভিযোগ, গত ২৪ এপ্রিল রাতে ঘড় খালি পেয়ে মাখনের চরের সালাম মেম্বার ঘরে ঢুকে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে । এসময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সে টয়লেটে পালায়।পরে সে প্রতিবেশীদের হাত পা ধরে  পালিয়ে যায়। ধর্ষিতার স্বামী খবর পেয়ে পরের দিন ঢাকা থেকে বাড়িতে আসে। বিচারের আশায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ওইদিনই ডাংধরা ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় মেম্বার হামিদুল ইসলামের কাছে যান ভুক্তভোগী নারী। তবে মামলা বা আইনি সহযোগিতার পরিবর্তে সালিশ ডেকে  মাত্র ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করে কথিত মীমাংসা করে দেন হামিদুল ইসলাম ও  আনিছুর রহমান বাপ্পী সহ কয়েকজন মেম্বার। 

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জানান, গত শুক্রবার রাতে বাঘার চর আশ্রয়ণ কেন্দ্র সালিশি বৈঠক বসার কথা থাকলেও সেটা নিয়ে যায় অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার সালামের বাড়িতে। কয়েকজন ইউপি সদস্যসহ তার অনুসারীদের নিয়ে সালিশি বোর্ড গঠন করে কথিত বিচারকাজ পরিচালনা করেন ইউপি মেম্বার হামিদুল। ধর্ষককে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করে ‘মীমাংসা’ করে দেন ইউপি মেম্বারগণ। ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মামলা করতে নিষেধ করেন মেম্বারগণ।এবং আরো বলেন, এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিলে গ্রাম ছাড়া করবো।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বলেন, ‘আমার স্ত্রীর ইজ্জতের দাম ১ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করে রায় দেন ইউপি মেম্বার হামিদুল,আনিসুর রহমান বাপ্পি। আমার স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করেছে সালাম মেম্বার। তার শাস্তি না দিয়ে উল্টো তার পক্ষ নিয়ে আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, অভিযুক্ত সালাম মেম্বার মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত।এই ঝামেলার মীমাংসা করতে স্থানীয়রা ইউপি মেম্বার হামিদুল ও আনিসুর রহমান বাপ্পির শরণাপন্ন হলে তারা আমাদের জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে কথিত সালিশ করে থাকেন। সালিশে স্বজনপ্রীতি ও টাকা নিয়ে অন্যায় রায় দেন তারা। এ ছাড়া ধর্ষণের বিচার কোনো সালিশি বৈঠকে সম্পন্ন করার বিধান নেই জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়ন পরিষদটির সাবেক এক সদস্য (মেম্বার) বলেন, ‘ধর্ষণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এটি গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করার কোনো সুযোগ নেই। এদিক থেকে ওই সালিশি কার্যক্রম সঠিক হয়নি।’

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘ধর্ষণের মতো অপরাধের মীমাংসা ১ লক্ষ  টাকা জরিমানায়! এটি কোনোভাবেই সঠিক মীমাংসা হতে পারে না। এ ছাড়া এটি ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারের জন্য খুবই দুঃখজনক।’

এ বিষয়ে ডাংধরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বলেন, আমি বিষয় টি শুনেছি। মেম্বাররা কি করেছে সেটা জানিনা।

অভিযুক্ত সালাম মেম্বারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। 
বিচারে উপস্থিত থাকা হামিদুল  মেম্বার, আনিসুর রহমান বাপ্পী মেম্বার, আব্দুর রাজ্জাক, মেম্বার ফরিদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। 

এ ব্যাপারে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন,  এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।অভিযোগ পেলে ব্যবস্তা নিবো।

Leave Your Comments