ডান হাতটি রক্ষা করা গেল না শাহিনের

Date: 2024-04-27
news-banner

বার্তা বিচিত্রা সর্বশেষ সংবাদ পেতে Google news অনুসরণের জন্য ক্লিক করুন

 

আব্দুল্লাহ আল মামুন (প্রধান প্রতিবেদক):

 

ডাক্তারদের বহু চেষ্টার পরেও রক্ষা করা গেল না শাহিনের ডান হাতটি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক সার্জন (ভাস্কুলার) ডা. মোহাম্মদ রওনাক খুরশীদের দেয়া বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পচন ধরা হাতটিকে রক্ষা করার কোনো উপায় না থাকায় এবং হাতের পচন দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকায় ঈদের আগের দিন অপারেশনের মাধ্যমে শাহিনের ডান হাতটি কনুই পর্যন্ত কেটে তার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। সুস্থ সবল ও সুঠাম দেহের অধিকারী ৩০ বছরের যুবক শাহিনের নামের সাথে পরক্ষণেই যোগ হয়ে যায় নির্মম দু’টি শব্দ “শারীরিক প্রতিবন্ধী।”

 

অপারেশনের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১০২ নং ওয়ার্ডের ৮ নং বেডে কাটা হাত নিয়ে বসে থাকা শাহিনের চেহারার অভিব্যক্তি আর নির্লিপ্ত চোখ বলে দেয়, তার হৃদয়ে রক্তক্ষরণের যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে, সে তার হিসাব মেলাতে পারছে না। ‘কি করেই বা মিলবে এ হিসাব!’ তাই সে ফ্যাল ফ্যাল করে শূণ্যে তাকিয়ে আছে। আর সেখানে সে যেন তার এক অন্ধকার ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু কিছুই যেন করার নেই তার।

 

চলতি মাসের ২ তারিখ (মঙ্গলবার) বিকাল ৩ টার দিকে মোহাম্মদপুর থানাধীন রায়ের বাজার ক্যান্সার গলিতে সিনেমা স্টাইলে লাঠিসোঠা নিয়ে পূর্ব শক্রতার জের ধরে শাহিনের উপর অতর্কিত হামলা চালায় খলিল (২৭), কাকলী (১৭), কাজলী (৩০), চায়না ইমন (১৮) ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জন দূর্বৃত্ত। এ সময় চায়না ইমন ধারালো চাকু দিয়ে শাহিনের পিঠে সজোরে পাড় (কোপ) মারে। শাহিন রাস্তায় পড়ে গেলে শাহিনের ডান হাতে উপর্যুপরি কোপায় সে। এ বিষয়ে ভিকটিম শাহিনের স্ত্রী লাইলি বেগম পরদিন বুধবার মোহাম্মদপুর থানায় উপস্থিত হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। পেনাল কোড ১৮৬০ অনুযায়ী, ১৪৩/৩২৩/৩০৭/৩২৬/৫০৬ নং ধারায় যার মামলা নম্বর-৩২, তারিখ-০৩/০৪/২০২৪ খ্রি.। পরে কয়েকজন আসামী পুলিশের হাতে আটক হয়ে বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসলেও মূল আসামী চায়না ইমন রয়ে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

 

এ বিষয়ে গত ৮ এপ্রিল ‘বার্তা বিচিত্রা’ ও ‘বাংলাদেশ সকাল’সহ কয়েকটি পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে মামলার তদন্ত অফিসার রায়ের বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস.আই. নাজমুল ঐদিন পৌনে চারটার দিকে এই প্রতিবেদককে জানান, “মূল আসামী চায়না ইমন মাদকসহ গ্রেফতার হয়েছে। তাকে এই মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হবে।”

 

এদিকে জামিনে থাকা আসামীরা লাইলি বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের মুঠোফোনে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি ও হুমকি-ধামকি দিয়ে বেড়াচ্ছে বলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মর্মে আভিযোগ করেন মামলার বাদী লাইলি বেগম। অন্য একটি সূত্রে জানা যায় যে, এই মামলার আসামীদের আগামী ১৯ মে আদালতে হাজির হওয়ার দিন তারিখ ধার্য রয়েছে। 

Leave Your Comments