মঈনুদ্দীন শাহীন কক্সবাজারঃ
দিন দিন লাগামহীন হয়ে উঠছে রোহিঙ্গারা। শক্তি প্রদর্শনে খুনাখুনি, অস্ত্র প্রদর্শন, অপহরণ সহ নানা অপকর্মের মাত্রা যেনো দিন দিন বেড়েই চলেছে।
আধিপত্য বিস্তারে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র শক্তি প্রদর্শন শুরু করায় পুরো ক্যাম্পজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। গত চার মাসে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন ২৩ জন।
গত ১৮ জানুয়ারি বান্দরবানের তমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া জিরো পয়েন্টে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুজনের মৃত্যুর পরেই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অত্যাধুনিক এম-১৬ ও একে-৪৭ রাইফেলের মতো ভারী অস্ত্র ব্যবহারের তথ্যটি সামনে আসে।
তমব্রু সীমান্তে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারে গিয়ে নিহত হন গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা। এ ছাড়া ক্যাম্পের পাহাড়ি এলাকা ও সীমান্তের জিরো পয়েন্টে রয়েছে অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা ও গুদাম। ফলে চরম নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে কক্সবাজারে বসবাসরত স্থানীয়রা। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের অপতৎপরতা দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। এ মুহুর্তে এদের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
অন্যদিকে স্থানীয়রা বলছেন, কক্সবাজারের উখিয়া টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই উশৃংখল ও উগ্র প্রকৃতির। তারা বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত হয়ে ক্যাম্পে এবং ক্যাম্পর বাইরে এসে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা করছেনা।
ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা করে অধিকাংশ রোহিঙ্গা এখন প্রচুর অর্থ বৈভবের মালিক, যার কারনে তারা দেশের আইন শৃঙ্খলাকে তোয়াক্কা করছেনা। কিছু কিছু রোহিঙ্গা বিভিন্ন অপরাধে গ্রেফতার হলে ও আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে আবার বেরিয়ে আসছে, জড়িয়ে পড়ছে আবার অপরাধ কর্মকান্ডে। বিশ্বস্থ সুত্র বলছে, রোহিঙ্গাদের পক্ষে কাজ করা কিছু অতি উৎসাহি এনজিও র অতি আহ্লাদ তাদের এসব অপরাধ কর্মে উৎসাহ যোগাচ্ছে।
এ দিকে সীমান্তে নতুন করে বেশ কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। এ ব্যপারে কক্সবাজার জেলা পুলিশের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবির পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে সীমান্তে। ক্যাম্পে অপরাধ প্রবণতা রোধে সেনাবাহিনী, র্যাব,এপিবিএন এর সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছে।
সম্প্রতি ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনিসহ তার সংগঠনের ২৮ শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরিয়ে দিতে পোস্টার লাগানো হয়েছে। বার্মিজ ভাষায় এসব পোস্টার লাগানো হয়। তবে কারা এসব পোস্টার লাগিয়েছে তার কোনো তথ্য জানাতে পারেনি কেউ।
এপিবিএন -৮ এর সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) ফারুক আহমেদ বলেন, বিভিন্ন ক্যাম্পে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পোস্টারে থাকা নামগুলোর সবাই সন্ত্রাসী। তারা একাধিক মামলার পলাতক আসামি। এপিবিএন সহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। ক্যাম্পের বেশিরভাগ স্থানে তল্লাশিসহ গোয়েন্দা তৎপরতা ও বাড়ানো হয়েছে।