কুমিল্লায় শিশু অপহরণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

Date: 2023-02-08
news-banner

বার্তা বিচিত্রা সর্বশেষ সংবাদ পেতে Google news অনুসরণের জন্য ক্লিক করুন



তাপস চন্দ্র সরকার, কুমিল্লা।।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণে এডভোকেট মোঃ খোরশেদ আলমের শিশু সন্তান আনাস ইসলাম নুহিনকে অপহরণসহ মুক্তিপণ আদায়ের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন কুমিল্লার আদালত।

বুধবার (৮ ফেব্রুআরি) দুপুর ১২টায় এ রায় দেন কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০১ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

মামলার বিবরণে জানাযায়- ২০২১ সালের ৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টায় সময় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা হালে লালমাই উপজেলাধীন রাইপুর গ্রামের মনিরুজ্জামানের ছেলে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির নিয়মিত সদস্য এডভোকেট খোরশেদ আমলের শিশু সন্তান ভিকটিম আনাস ইসলাম নাহিদ (১০) আইসক্রিম খাওয়ার জন্য দশ টাকা নিয়ে সদর দক্ষিণ মডেল থানাধীন নতুন পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড ভাড়া বাসা হতে বের হয়ে পাশের দোকানে গেলে ভিকটিম নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বাসায় ফিরে না আসায় অনেক খোঁজাখুজি না পেয়ে পরদিন সদর দক্ষিণ মডেল থানায় সাধারণ ডায়রী করে (যাহার নং ৪১৬)। পরবর্তীতে ঐদিন সকাল ৯টায় অজ্ঞাত ব্যক্তির মোবাইল হতে ভিকটিমের পিতার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করে জানায় যে, ভিকটিম আনাস ইসলাম নাহিদ আসামির হেফাজতে রহিয়াছে, ভিকটিমকে সুস্থ ফেরত পেতে হলে ৪০,০০০ টাকা মুক্তিপণ দাবী করিলে নচেৎ ভিকটিমকে প্রাণনাশ করিয়া ফেলিবে। ভিকটিমের পিতা নিরুপায় হয়ে তিনধাপে ৩৫০০০ টাকা নগদে পাঠালে কুমিল্লা মডেল থানাধীন আলেখারচর বিশ্বরোড এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা চত্বরের উত্তর পাশে ছেড়ে দেয়। ভিকটিমের পিতা সংবাদ পেয়ে সন্ধ্যা ৬টায় ভিকটিমকে উদ্ধার করেন। 

সেই সূত্রধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই খালেকুজ্জামান ভিকটিমের অপহৃতের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহপূর্বক আসামি আবু ইউসুফকে গ্রেফতার করিলে আসামি স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী দেন।তৎপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই খালেকুজ্জামান তদন্তপূর্বক ২০২১ সালের ২৫ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ৭/৮ ধারার বিধানমতে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল করিলে আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। তৎপর ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানী অন্তে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ার আসামি আবু ইউসুফকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৭ ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও বিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং ৮ ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বিশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। 

রায়ে আরও উল্লেখ্য করেন যে, উভয় সাজার মেয়াদ একত্রে কার্যকর হবে এবং দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির হাজতকালীন সময় তার সাজার মেয়াদ হতে কর্তন হবে। রায় প্রদানকালে আসামি আবু ইউসুফ কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবু ইউসুফ হলেন নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার  ঠনারপাড় ( আবুল খায়ের মেম্বারের বাড়ী) নিবাসী মোঃ ইসমাইলের ছেলে।  

রাষ্ট্রপক্ষের বিজ্ঞ কৌশলী এডভোকেট প্রদীপ কুমা দত্ত বলেন- এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ খুশি।

ভিকটিমের পিতা এডভোকেট খোরশেদ আমল বলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-০১ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন স্যার আজকে যে যুগান্তকারী রায় দিয়েছে আমি সন্তুষ্ট। এরফলে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে আমি মনে করি।

Leave Your Comments